পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
ভোটাধিকারের পর এবার আরেক বিষয় নিয়ে প্রতিবাদে নেমেছেন হানিফ বাংলাদেশী। তার এবারের বিষয় ঘুষ দুর্নীতি নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিবাদে ও প্রতিরোধে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান এবং লাল কার্ড প্রদর্শন।
নোয়াখালীর হানিফ বাংলাদেশী গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। সিলেট জেলা দিয়ে শুরু করে ২১ জেলায় জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে বুধবার পঞ্চগড় পৌছান। বুধবার বিকেলে তার কার্যক্রমের ২২ তম জেলা হিসেবে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনকেও স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে ঘুষ দুর্নীতি নৈতিক অবক্ষয়কে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন।
স্মারকলিপিতে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে তারাই ঘুষ, দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়ে নিমজ্জিত ছিল। এখন তা আরও চরম আকার ধারণ করেছে।
সমাজ রাষ্ট্র সর্বত্রই ঘুষ, দুর্নীতিসহ সামাজিক, মানবিক, পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় চলছে। গুজব ছড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।
শিশুদের ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একে অন্যকে কুপিয়ে হত্যা করছে। নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারী আকার ধারণ করছে। পরস্পর দোষারোপ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি এসব অবক্ষয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
হানিফ বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, নাগরিকরা তাদের দায়িত্ববোধ কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে এবং
প্রতিটি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকগণ যদি নিরপেক্ষভাবে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে তাহলে ওই জেলায় ঘুষ, দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয় পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব না হলেও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য আমি প্রত্যেক জেলার কর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিচ্ছি।
আগামী ২০ অক্টোবর কক্মবাজার জেলার জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়ার মাধ্যমে তিনি তার কার্যক্রম শেষ করবেন। তারপর ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসককে দেয়া স্মারকলিপির কপি তিনি রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছে জমা দিয়ে তার দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাবেন।
তার নাম মো. হানিফ হলেও এ বছরের ১৪ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া প্রায় ১ হাজার ৪ কিলোমিটার একক পদযাত্রা করায় তাকে অনেকে হানিফ বাংলাদেশী উপাধী দেয়। এখন এ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। হানিফের বাড়ি নোয়াখালী সদর উপজেলা মাইজদী এলাকায়।
তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। দুই ভাই বোনের মধ্যে তার বড় বোনটির অকাল মৃত্যু হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিএসসি পরীক্ষা দিলেও কৃতকার্য হতে পারেননি।
বাড়িতে মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রেখে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ অবক্ষয়ের প্রতিবাদ আন্দোলনে বেড়িয়ে পড়েন তিনি। চট্রগ্রাম বন্দরের একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টে কমিশন ভিত্তিতে কাজ করেন তিনি। তার সামান্য আয় থেকে পরিবারের খরচ দিয়ে বাকিটা আন্দোলনে ব্যয় করেন।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply