আজকের স্বদেশ ডেস্ক::
স্যুটকেসের ভেতর থেকে অজ্ঞাত (৫৭) ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গত রোববার সন্ধ্যার দিকে সবুজবাগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ওই স্যুটকেসটি উদ্ধার করা হলেও পুলিশ আজ সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় জানতে পারেনি। জানাযায়নি সিএনজির ভেতর স্যুটকেস রেখে পালিয়ে যাওয়া রহস্যময়ী তরুনীটি কে?
সোমবার রাতে সবুজবাগ থানার ওসি’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, স্যুটকেসের ভেতর লাশ ভরে সিএনজিতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় একজন তরুনীর নাম শুনতে পাচ্ছি। তবে এখন পর্যন্ত ওই তরুনীকে খুঁজে পাইনি। তাকে খোঁজা হচ্ছে। যে সিএনজি থেকে লাশ উদ্ধার হয়েছে সেই সিএনজি চালককে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমি এখন তদন্তের মধ্যে আছি। তাই এব্যাপারে কিছুই বলতে পারছি না।
তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সিএনজি চালক দাবী করে বলেছেন, একজন তরুনী বনশ্রী এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের নয়াপুরা যাওয়ার কথা বলে তার অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে সুটকেসটি তোলে। পরে পূর্ব মাদারটেক প্রজেক্টের সামনে যাওয়ার পর পানি কেনার কথা বলে সিএনজি থেকে নেমেই উধাও হয়ে যায়।
এরআগে সবুজবাগ থানার উপ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, রোববার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে ২১/১, পূর্ব মাদারটেক প্রজেক্ট এর সামনে তিন রাস্তার মোড়ে আলমগীরের চায়ের দোকানের সামনে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে একটি কালো রঙের সুটকেস উদ্ধার হয়। সুটকেসটির ওপরে ওরনা পেঁচানো ছিল এবং স্কচটেপ দিয়ে বাঁধা ছিল।
তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির গলায় রশি দিয়ে গিঁট দেয়া ছিল। হাঁটুতে সামান্য রক্ত জমাট ছিল। মুখে ছিল পাকা দাড়ি। সুটকেসের ভেতরে একটি কালো বোরখা ছিলো। পুলিশের ধারণা, দুষ্কৃতকারীরা পরিপল্পিতভাবে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে হত্যার পর সুটকেসে ভরে লাশ ওই স্থানে ফেলে রেখে যেতে পারে।
সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক সাংবাদিকদের আরো জানান, সিএনজিচালকের বর্ণনা মোতাবেক, শনিবার রাতে ২০ বছর বয়সী তরুনী বনশ্রী থেকে সিএনজিযোগে মাদারটেক প্রজেক্টের সামনে যায়। সেখানে তার সিএনজি থামিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার নয়াপুর যাওয়ার কথা বলে ৫’শ টাকায় আরেকটি সিএনজি ভাড়া করে। এসময় তরুনীর সাথে একটি স্যুটকেস ছিলো। পরে ভাড়া করা সিএনজি চালককে তরুনী জানায়, সুটকেসের ভেতরে কাচের জিনিস আছে, সাবধানে ওঠাতে হবে। তার কথামতো আরো দুই সিএনজি চালকের সহায়তায় ভারি সুটকেসটি আগের সিএনজি থেকে পরের সিএনজিতে তোলা হয়। এরপর সিএনজি নিয়ে রওনা হয় নয়াপুরের উদ্দেশে।
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আরো জানান, রাত ৯টার দিকে সিএনজি গাড়িটি নন্দিপাড়া ব্রিজমুখী সিসিলি গার্মেন্টস এর সামনে যায়। এসময় রস্তায় যানজট ছিল। ওই সময় সিএনজি যাত্রী তরুনী সিএনজিচালক মজিবর কে বলেন, ‘আমার পানির পিপাসা লেখেছে, আমি পানি কিনবো। তখন সিএনজি চালক তার সিএনজি গাড়িটি এক পাশে রাখেন, আর ওই নারী পানির আনতে নেমে যান । ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরও ওই নারী না আসায় চালক আশপাশের লোকজনের সাথে কথা বলে তরুনীর খোঁজার চেষ্টা করেন।
এসময় একজন পথচারী সিএনজি চালককে বলেন, তিনি একটি মেয়েকে দৌড়ে চলে যেতে দেখেছেন। পরে চালকের মনে সন্দেহ জাগে। চালক আবার সিএনজি ঘুরিয়ে মাদারটেক প্রজেক্টের সামনে যান। সুটকেসের ভেতরে কি আছে তা জানার জন্য প্রথমে তিনি নাড়াচাড়া করেন। সিএনজি চালকের দাবি, সুটকেসের চেইনের কিছু অংশ খুলে ফাঁক দিয়ে ভেতরে মানুষের মাথা দেখতে পান। এটি দেখেই তিনি আতকে উঠেন। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সেখানে ছুটে যায়। পুলিশ স্যুটকেস থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী শেষে মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply