গ্রামে টানটান উত্তেজনা! রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা!!
বিশেষ প্রতিনিধি::
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদ পুরে বহুল আলোচিত যুবলীগ নেতা জুয়েল বাহিনী আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে৷ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র সহ নানা ধরনের মরনাস্ত্র নিয়ে ওই বাহিনী কর্তৃক গ্রামে চলছে অস্ত্রের মহড়া, যেকোনো সময় চোরাগোপ্তা হামলা সহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী ৷
জানাযায়, গত ২১ মার্চ শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাউদ পুর গ্রামের মৃত আব্দুস শহিদ মিয়ার পুত্র দিনমজুর আলমগীর মিয়া নামের এক যুবককে তার নিজ বাড়ী থেকে দিনদুপুরে জুয়েল বাহিনী কর্তৃক অস্ত্র শস্ত্র সহকারে হামলা চালিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আলমগীরকে অপহরণ করে মারপিট করে জুয়েলের বাড়ীতে নিয়ে যায়৷ সেখানে তাকে ধরে নিয়ে একটি গোপন কক্ষে আটক করে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে৷ পরে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের সহায়তায় আলমগীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷
এঘটনার জেরধরে প্রায় ২ঘন্টাব্যাপী জুয়েল বাহিনীর হামলা ও সংঘর্ষে সাংবাদিক সহ ১৫/২০ জন আহত হন৷ সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি এম মুজিবুর রহমান গুরুতর আহত হন৷ এমনকি সংবাদ প্রকাশের জেরধরে সাংবাদিক এম.মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করা হয়৷ এঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপণ করেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ৷ এনিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে প্রেসক্লাবের পক্ষথেকে ও নিন্দা জানানো হয়৷ এদিকে ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম জুয়েল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় ও গ্রামের সাধারণ মানুষকে হামলা ও নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে৷ উক্ত নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জুয়েল ও তার বাহিনির লোকজনের হামলায় অন্তত ১৫/২০ জন প্রতিবেশী আহত হন৷ এই সৃষ্ট বিরোধকে মিমাংসার কল্পে ২৮ গ্রামের বিশিষ্ট সালিশ বিচারকগন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ একাধিকবার চেষ্টা করেও জুয়েল বাহিনীকে সামাজিক বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি৷ এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছালিক মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা স্থানীয় সামাজিক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেছি বিষয়টি আপোষে মিমাংসা করার জন্য কিন্তু ফখরুল ইসলাম জুয়েল ও তার লোকজন বিচার সালিশ অমান্য করেছেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক৷
এ ব্যাপারে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন বিবিয়ানা শিল্পাঞ্চল হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম খসরু বলেন,দাউদ পুর গ্রামের সৃষ্ট বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রামটিতে মারাত্মকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এ বিষয়ে সামাজিক নেতৃবৃন্দের সালিসি প্রক্রিয়ার ব্যর্থতার দ্বায়বার তাদেরকেই নিতে হবে যাহারা মানুষের অধিকার হরন করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন৷
এ বিষয়ে আহত সাংবাদিক এম. মুজিবুর রহমান বলেন, হামলা ও সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি নিজেও গুরুতর আহত হন এবং জুয়েল বাহিনীর প্রধান যুবলীগ নেতা ফখরুল ইসলাম জুয়েল এর চাচা আওয়ামী লীগ নেতা মানিক মিয়ার পুত্র বহুল আলোচিত লিটন মিয়ার দায়েরকৃত ষড়যন্ত্র মূলক একটি মামলায় তাকেও প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়, দাউদ পুর গ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ, জুয়েল বাহিনীর লোকজন গ্রামের রাস্তাঘাটে অস্ত্র শস্ত্র সহকারে দিনে রাতে দল বেঁধে মহড়া দিয়ে অরাজকতা সৃস্টি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছে৷ স্কুল মাদরাসায় একটি পক্ষের ছাত্র/ ছাত্রী ও সাধারণ লোকজন গ্রামের রাস্তাঘাটে চলাচল করতে বাঁধা দিচ্ছে জুয়েল বাহিনী৷ এমনকি কোমলমতি ছাত্রীদের সাথেও ঘটছে প্রতিনিয়ত ইভটিজিং সহ নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড৷ এ নিয়ে সাংবাদিক মহল ও মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপণ করেন৷
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরীর নিন্দা প্রস্তাবের উত্তরে বলেন, সাংবাদিক এম.মুজিবুর রহমান প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন,যাহাতে সংঘর্ষ না হয় এমনকি সৃষ্ট বিরোধ সামাজিক ভাবে মিমাংসার স্বার্থে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন,তবে কেহ যদি মুজিবুর রহমানকে আসামী করে মামলা দেয়, এতে ওসির কিছু করার থাকেনা৷
তবে জুয়েল বাহিনীর লোকজন সামাজিক শালিস বিচার অমান্য করায় পরিস্থিতি উত্তাল বলেও তিনি স্বীকার করেন৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রামে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা হবার আশংকা রয়েছে৷ এ বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল৷
সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম সারোয়ার, বার্তা সম্পাদক জুয়েল আহমদ।
ই-মেইল: ajkershodesh@gmail.com
প্রধান কার্যালয়: ব্যাংক প্লাজা, রানীগঞ্জ বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ।