পঞ্চগড় প্রতিনিধি::
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় তিস্তাপাড়া গ্রামে লটকোন চাষ গাছের গোড়া থেকে মগ ডাল পর্যন্ত শুধু ফল আর ফল। যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। এপৃথিবীতে প্রকৃতি তাঁর নিপুন হাতে থরে থরে গাছের গোড়া থেকে মগ ডাল পর্যন্ত সাজিয়ে রেখেছেন এসব ফল। কিন্তু এখন সেসব শুধুই ইতিহাস। লটকোন চাষ এখন এই জেলার চাষিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। শুধু পরিবারের সদস্যরা নয় লটকোন এখন সরবরাহ হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। ভালো দামও পাচ্ছেন লটকোন চাষীরা।
জেলা সদর এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার চাষীরা বাণিজ্যিক ভাবে লটকোনের বাগান করেছেন। লটকোন উৎপাদনে পঞ্চগড় জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। সরেজমিনে দেখা যায় এসব বাগানের গাছগুলোতে গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত লটকোন ধরেছে। চাষিরা জানায় সুস্বাদু এই ফল চাষে খুব বেশি খরচ নেই। গোবর সার ছাড়া অন্যকোন রাসায়নিক সার প্রয়োজন পড়েনা। মাটির উর্বরতাই লটকোন চাষের মূল উপাদান। এই জেলার মাটি লটকোন চাষের জন্য উপযোগী।
দেবীগঞ্জ উপজেলার ছিলাহাটি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়া গ্রামের লটকোন চাষী গকুল চন্দ্র রায় জানান ০৭ বিঘা জমিতে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ লটকোন বাগান করেছি। এ বছর ৫৫ টি লটকোন গাছের সাড়ে ৩ লক্ষ টাকায় লটকোনের মধ্যস্বত্বভোগী ফল ব্যাবাসয়ীদের নিকট বিক্রী করেছেন। এই বাগানে ৬০টির বেশী লটকোন গাছ রয়েছে। বিগত কয়েকবছর ধরে তিনি লটকোন বিক্রী করে আসছেন। তিনি জানান এই ব্যবসায়ীরা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সব লটকোন সরবরাহ করেন।
চাষী গকুল চন্দ্রের ছেলে অতুল চন্দ্র জানান বাবার লটকোন চাষ দেখে ০১ বিঘা জমিতে আমিও ২০ টি লটকোন গাছ লাগিয়েছি, এই ২০টি গাছে ০১ লক্ষ টাকার লটকোন বিক্রী করেছি এবছর। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এবছর জেলায় ছোট ছোট বাগান আকারে ৩৫ হেক্টর জমিতে লটকোনের চাষ করা হয়েছে। গতবছর এর পরিমান ছিলো ৩২ হেক্টর। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ আবু হানিফ জানান এবছর জেলায় ছোট ছোট লটকোন বাগান ৩৫ হেক্টর জমিতে লটকোনের চাষ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ লটকোন চাষীদের সার্বক্ষনিক ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। পঞ্চগড়ের উৎপাদিত লটকোন আকারে বড়, আকর্ষনীয় এবং রসালো হওয়ায় লটকোনের চাহিদা খুবই বেশী। স্থানীয় ভাবে চাহিদা পূরন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় লটকোন সরবরাহ করা হচ্ছে। লটকোন চাষে কৃষকরা লাভবান হবে। আগামীতে পঞ্চগড়ে ব্যাপক লটকোন চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
আজকের স্বদেশ/এবি
Leave a Reply