আশীষ চক্রবর্তী:
দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হল জগতজননী দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। যা কালের বিবর্তণে হিন্দু সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।
দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত।
শারদীয়া দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা বেশি। বাসন্তী দুর্গাপূজা মূলত কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। দুর্গাপূজা ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল সহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রে পালিত হয়ে থাকে।
তবে বাঙালি হিন্দু সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হওয়ার দরুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ও বাংলাদেশে দুর্গাপূজা বিশেষ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় আসছে।
এমনকি ভারতের আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর এবং উড়িশ্যা রাজ্যেও দুর্গাপূজা মহাসমারোহে পালিত হয়ে থাকে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যে প্রবাসী বাঙালি ও স্থানীয় জনসাধারণ নিজ নিজ প্রথা অনুযায়ী শারদীয় দুর্গাপূজা ও নবরাত্রি উৎসব পালন করে।
এমনকি পাশ্চাত্য দেশগুলিতে কর্মসূত্রে বসবাসরত বাঙালিরাও দুর্গাপূজা পালন করে থাকেন। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়াদশমী নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় দেবীপক্ষ।
দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া, এই দিন হিন্দুধর্মালম্বিরা তর্পণ করে তাঁদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন করেন। বাংলাদেশে বিজয়াদশমীতে সর্বসাধারণের জন্য এক দিন সরকারি ছুটি থাকে।
এবারের দূর্গাপুজা ১৫ অক্টোবর সোমবার মহাষষ্ঠি থেকে শুরু হবে। এবারে দেবী দূর্গার আগমন ঘোটকে যা দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং রোগশোক এর প্রকোপ বৃদ্ধি করবে। এছাড়া দেবীর গমন দোলায় যা মহামারী, অকালমৃত্যুসহ নানাবিদ দুর্যোগের বার্তা বহন করে।
মায়ের আগমনে এই বিশ্বচরাচর রোগশোক মুক্ত হোক, সকল প্রাণী সুখি হোক, দূর্গাপুজার এই মহালগ্নে ধর্ম জাতি বর্ন নির্বিশেষে সকলের মধ্যে প্রেম প্রীতি বৃদ্ধিপাক। যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা।
নমোস্তসস্যৈ নমোস্তসস্যৈ নমোঃ নমোঃ
লেখক: আশীষ চক্রবর্তী
সহকারী প্রোগ্রামার আইসিটি ডিভিশন,
জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply