সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি::
প্রবীণ সাহিত্যিক ডা. মুহাম্মদ করম আলীর ১৩তম গ্রন্থ ‘আশা আছে তবু’র মোড়ক উন্মেচন করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাতে লেখকের নিজ বাড়িতে এ উপলক্ষ্যে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শহরের মুহাম্মদপুরের প্রবীন ব্যক্তিত্ব হাজী খূর্শিদ আহমদের সভাপতিত্বে ও লেখকের দৌহিত্র আব্দুল কুদ্দুছ মারুফের উপস্থাপনায় মোড়ক উন্মেচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, শিক্ষাবিদ আর্শ্বাদ আলী, হাজী আব্দুল কাদির, সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান পীর, প্রকাশক সিরাজুল হক ওলী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সাজিদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট গোলাম রব্বানী, ব্যবসায়ী আব্দুস শহীদ গাজী, আব্দুস সাত্তার মোহাম্মদ মামুন প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন লেখক ডা. মুহাম্মদ করম আলী এবং এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাব সদস্য, সাংবাদিক ও কলামিস্ট এনামুল হক। গ্রন্থটি প্রকাশ উপলক্ষে লেখককে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী ও কলামিষ্ট হোসেন তওফিক চৌধুরী। মোড়ক উন্মেচন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডা. করম আলী বহুমাত্রিক জীবনের অধিকারি একজন গুণী মানুষ। তাঁর লেখা প্রতিটি গ্রন্থে সাহিত্যে রসের পাশাপাশি সমাজের মানুষকে সচেতন করার তাগিদ রয়েছে।
কর্মজীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও সাহিত্য চর্চা থেকে তিনি কখনো বিচ্যুত হননি। জীবনের শেষ লগ্নে এসেও তিনি সাহিত্যের মাঝে বিচরণ করছেন। নানা প্রতিবন্ধকতায় উচ্চতর একাডেমিক শিক্ষায় না থাকার পরও করম আলী সাহিত্য রচনায় যে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন তা গবেষণার দাবি রাখে। তার ক্ষুরধার লেখনী প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশের বিখ্যাত লেখক, কবি ও সাহিত্য গবেষকদের মাঝে। গ্রন্থের লেখক ডা.করম আলী তার আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, ‘আমি এখন জীবনের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে। জীবন চলার পথে যখন যা মনে হয়েছে লিখার চেষ্ঠা করেছি। এর সাহিত্য মূল্য নিয়ে কখনো ভাবিনি। আর আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ।
আমার লেখনিও অতি সাধারণ। আমার এই লেখা পড়ে যদি কারো ভালো লাগে এতেই আমার স্বার্থকতা। আপনারা আমার জন্যে দোয়া করবেন যাতে মৃত্যুর সময় ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারি।’ মুহাম্মদ করম আলী’র লেখা ‘আশা আছে তবু’ কাব্য গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে পান্ডুলিপি প্রকাশন। এর প্রচ্ছদ করেছেন ওয়াজিহা মাহমুদ মানহা।
লেখকের পর্তুগাল প্রবাসী দৌহিত্র আব্দুল কুদ্দুস মোহাম্মদ মারুফকে বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে। কাব্য গ্রন্থটিতে মোট ২৬টি কবিতা স্থান পেয়েছে। এসব কবিতায় ধর্মানুরক্তি, মানবিক ভালোবাসা-প্রীতি, রাজনীতি ও সমাজনীতি, সম-সাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ¯্রষ্টার প্রতি নিজেকে সমর্পনের ব্যাকুলতা প্রকাশ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রবীন সাহিত্যিক ডা. করম আলী ‘কবর পূজা’ বই লেখার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি একে একে প্রকাশ করেন মুহাম্মদপুরের ইতিকথা, মুহাম্মদপুর দরগাহ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ একাত্তরের খাগড়া নল, ভবঘুরের ডায়েরি, গান তবু গান নয়, এখতেলাফ ও দ্বীনি দায়িত্ব, ভোট এসেছে ভোট, সোনার মানুষ, উপদেশমূলক গ্রন্থ স্নেহাশীষ, আমার বাল্যকাল, আমার যৌবন ও বার্ধক্য। ‘আশা আছে তবু’ কবিতা গ্রন্থটি ডা. করম আলী’র ১৩তম প্রকাশনা।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply