আজকের স্বদেশ ডেস্ক::
টাঙ্গাইলে ২০ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক ঘটনায় ছাত্রীসহ ৪ জনের আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত টাঙ্গাইলের টাঙ্গাইল সদর উপজেলা, গোপালপুর এবং দেলদুয়ার উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে ।
বিয়ে না দেয়ায় অভিমানে যুবকের আত্মহত্যা
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিয়ে না দেয়ায় মা-বাবার ওপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক যুবক।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার চরসোনামুখী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন মিয়া (১৮) একই গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুর বারেকের ছেলে। তিনি মাটি কাটা ট্রাকের হেলপারের কাজ করতেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন পরির্বতন ডটকমকে জানান, দুই বছর বয়সে সুমনের মা অন্যত্র চলে যান। পরে তার বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকে সুমন সৎ মায়ের সংসারে বড় হন। পরে মাটি কাটা ট্রাকের হেলপারের কাজ করার সময় একটি মেয়েকে পছন্দ করেন। তাকে বিয়ে করবে বলে পরিবারকে জানান। কিন্তু, বিয়ের বয়স হয়নি বলে মা জানান।
এক পর্যায়ে সুমন গতকাল বৃহস্পতিবার মাকে আজকের মধ্যেই বিয়ে দিতে বলেন। বাবা আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে মা জানান। বিকেলে খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘরে যান সুমন। রাতে তিনি ঘরের ধর্নার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মায়ের সাথে অভিমান করে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মায়ের সাথে অভিমান করে রাজিয়া (১৩) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা করেছে । শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার যুগ আতাউল্লাহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাজিয়া একই এলাকার আজহার আলীর মেয়ে এবং সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ৮ শ্রেণীতে ছাত্রী ছিল ।
গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, রাজিয়ার কিছুটা মানসিক সমস্যা ছিল। এ অবস্থায় আজ সন্ধ্যার দিকে রাজিয়া কিছুটা পাগলামি করতে থাকে। এতে মা তাকে দিলে ধমক দিলে ঘরে চলে যায়। পরে সে ঘরের ভিতরে ধর্ণার সাথে আত্মহত্যা করে । পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেয় । পরে পুলিশ রাত ৯টার দিকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পরিবাবের কাছে হস্তান্তর করে । ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী যুবকের আত্মহত্যা
অপরদিকে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে শহিদুল ইসলাম (১৮) নামের এক প্রতিবন্ধী যুবক আত্মহত্যা করেছে। উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের চন্ডী গ্রামে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।নিহত শহিদুল ওই গ্রামের আব্দুল লতিফ বেপারীর ছেলে। পরে শুক্রবার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাত ১টার দিকে শহিদুল নিজ ঘরেই ছিলেন। রাত ৩টার দিকে তাকে ঘরে না দেখে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেলদুয়ার-টাঙ্গাইল সড়ক সংলগ্ন কারখানা তৈরির লক্ষে আবদ্ধ দেয়ালের ভেতরে বের হয়ে থাকা রডের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় শহিদুলকে। পরে সকালে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানালে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, শহিদুলের মা অন্য জায়গায় থেকে হোটেলে কাজ করেন। বাবাও প্রবাসে থাকেন। এতে করে দীর্ঘদিন ধরেই শহিদুল মানসিক রোগে ভুগছিলেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আরফান আলী ও পাথরাইল ইউপি চেয়ারম্যান হানিফুজ্জামান লিটন আত্মহত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছেলেটি মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। এর আগে স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগও রয়েছে শহিদুলের বিরুদ্ধে। এমনকি গত এক বছর ধরে শহিদুল মানসিক রোগী হিসেবে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বাবার সাথে অভিমান করে ছাত্রীর আত্মহত্যা
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের চরহুগড়া গ্রামে বাবার সাথে অভিমান করে মীম (১০) নামের এক ৫ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন । শুক্রবার বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিম একই এলাকার আলফাজুরের মেয়ে ।
পুলিশ বলেন, নিহতের পিতা আলফাজুর তার মেয়েকে না নিয়ে রংপুরে যায় । তাকে রংপুরে না নেয়ার মীম বাবার সাথে অভিমান করে ঘরের ভিতরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ।
টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ওসি সায়েদুর রহমান আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম সারোয়ার, বার্তা সম্পাদক জুয়েল আহমদ।
ই-মেইল: ajkershodesh@gmail.com
প্রধান কার্যালয়: ব্যাংক প্লাজা, রানীগঞ্জ বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ।