1. abubakarpressjp@gmail.com : Md Abu bakar : Md Abubakar bakar
  2. sharuarpress@gmail.com : admin520 : Md Gulam sharuar
  3. : alamin328 :
  4. jewela471@gmail.com : Jewel Ahmed : Jewel Ahmed
  5. ajkershodesh@gmail.com : Mdg sharuar : Mdg sharuar
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
হেড লাইন
আজকের নলজুর পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন ও সংবর্ধনা প্রদান বাসসের প্রতিনিধি হলেন মুহাম্মদ আমিনুল হক : জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার অভিনন্দন ছাত্রশিবির রানীগঞ্জ ইউনিয়ন শাখার বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সেবাদানকারী রোভার ও স্কাউটগণের মধ্যে সনদ বিতরণ শান্তিগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা, আসামিদের নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, প্রকৃত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি সুনামগঞ্জ জেলা হেলথ এ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন কর্মবিরতি পালন শান্তিগঞ্জে স্বাস্থ্য কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি মানবিক সংগঠন দ্ধীনেরটুক যুব ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন নির্বাচনের আগে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম জগন্নাথপুরে গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী গ্রেফতার

৪৭ বছর পর মিলল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের পরিবারের খোঁজ

  • Update Time : রবিবার, ৬ মে, ২০১৮
  • ৫২৭ শেয়ার হয়েছে

আজকের স্বদেশ ডেস্ক::

৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর অবশেষে পাওয়া গেছে। তার কবর সংরক্ষিত রয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও তার পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ার জন্য দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি গত ২৮ মার্চ এই প্রতিবেদক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানা থেকে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

পিলখানার বিজিবি হাবিলদার আবুল কালাম আজাদ মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে শহীদ লুৎফর রহমানের বাড়ির ঠিকানা ও পরিবারবর্গের মোবাইল নম্বর দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিলখানা থেকে পাওয়া তথ্য ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহীদ লুৎফর রহমানের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা গ্রামে। এখানে শহীদ লুৎফর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগম (৭৫), তার একমাত্র ছেলে সৌদি প্রবাসী মতিউর রহমান, নাতী মিতুল ও সিতুল, বিবাহিত নাতনী মোহিনী ও মিথিলা, নাতনী জামাই শাহাদত উল্লা হিরাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বসবাস করছেন।

শহীদ লুৎফর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগম (৭৫) জানান, নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা গ্রামের মরহুম জাফর আলী মুন্সীর ছেলে লুৎফর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ১৬ বছরের সংসার জীবনে তাদের একমাত্র সন্তান মতিউর রহমানের জন্ম হয়।

শিশুপুত্র মতিউরের বয়স যখন ২ বছর, তখনই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে লুৎফর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে শহীদ হন। তারা এ সময় শুধু এ টুকু জানতেন যে, লুৎফর রহমান রংপুর অঞ্চলে চাকুরিরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়েছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা লুৎফর রহমানের কবর জেয়ারত ও কবর শনাক্তের চেষ্টা করেছেন।

দেশ স্বাধীনের জন্য লুৎফর রহমানের মৃত্যুর কারণে শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে পিলখানা থেকে আমেনা বেগম ২ হাজার টাকা অনুদান পান। পরবর্তী সময় লুৎফর রহমান ইপিআর সদস্য হওয়ায় সরকারিভাবে তার পেনশন ভাতার মাসে ৮০ টাকা থেকে শুরু করে বর্তমান ৫ হাজার টাকা পেনশন ভাতা পাচ্ছেন।

লুৎফর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় প্রতিমাসে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ১০ হাজার টাকা নিয়মিত পাচ্ছেন আমেনা বেগম। তবে তিনি এখনও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাননি। শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনও এর বাস্তবায়ন হয়নি। আমেনা বেগম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হওয়ায় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি দাবি করেছেন।

এদিকে, লুৎফর রহমানের কবরের সন্ধান ও তার শাহাদতবার্ষিকী ফুলবাড়ী উপজেলাবাসী সম্মানের সাথে পালন করার বিষয়টি জানতে পেরে আমেনা বেগম ও তার নাতনী জামাই শাহাদত উল্লা হিরা ফুলবাড়ীবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

তারা বলেন, সামনের রমজান শেষে তারা সূদুর নোয়াখালী থেকে সপরিবারে লুৎফর রহমানের কবর জিয়ারত ও ফুলবাড়ী উপজেলাবাসীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসবেন।

দীর্ঘদিন পর ৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ায় ফুলবাড়ী সর্বস্তরের মানুষের একটি বিবেকের দাবি পূরণ হলো। আর ফুলবাড়ীর মানুষ অনেকটা দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পেলেন।

এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শহীদ লুৎফর রহমানের লাশের দাফন সম্পন্নকারীর একজন ফুলবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা শহীদ লুৎফর রহমানের লাশ ফুলবাড়ীতে দাফন করেছি। কিন্তু তার পারিবারিক খোঁজ পাইনি।

তুমি একজন সাংবাদিক হয়ে লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ার জন্য যে চেষ্টা চালিয়েছ, সেক্ষেত্রে আজ তুমি সফল হয়েছ। তোমাকে অভিনন্দন।

স্থানীয় মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়াটা ফুলবাড়ীবাসীর একটি সফলতা। এতে দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হলো।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ ওরাঁও বলেন, দীর্ঘদিন পর একজন বীর শহীদ মুক্তিয়োদ্ধার পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজ পাওয়াটা খুবই আনন্দের। এ সময় তিনি শহীদ লুৎফর রহমানের পরিবারের সদস্যদের ফুলবাড়ীতে আমন্ত্রণ জানান।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সারাদেশের মতো কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী এলাকার দেশপ্রেমিক বাঙালিরা সোচ্চার হতে থাকেন। ৭১ এর ২৮ মার্চ ভুরুঙ্গামারীর জয়মনি থেকে আসা একদল পাক হানাদার ফুলবাড়ীতে প্রবেশ করলে ফুলবাড়ীর কৃতি সন্তান সাহসী পুরুষ মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক বীর প্রতীক মরহুম বদরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়ে শহীদ লুৎফর রহমানসহ প্রায় অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধার একটি দল হানাদারদের পরাস্ত করার জন্য তাদের পিছু নেয়।

মুক্তিযোদ্ধারা ফায়ারিং পজিশন নিতে গেলে রাস্তায় সাধারণ মানুষের কারণে গুলি করতে পারেনি। পরে ফুলবাড়ী থেকে ধরলা নদীর কুলাঘাট পার হয়ে লালমনিরহাট সদরের নেছারিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর দলটি পৌঁছলে সেখানেই পজিশন অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ শুরু করেন। এই যুদ্ধটিই ৬ নং সেক্টরের প্রথম যুদ্ধ বলে জানিয়েছিলেন ফুলবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও এ সম্মুখ যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বীর প্রতীক মরহুম বদরুজ্জামান মিয়া।

আর এই ৬ নং সেক্টরের প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হলেন শহীদ লুৎফর রহমান। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণের পূর্বে লুৎফর রহমান ফুলবাড়ীর গংগারহাট ক্যাম্পে ইপিআরের হাবিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৬ নং সেক্টরের প্রথম এই বীর শহীদ লালমনিরহাট নেছারিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে সাথী মুক্তি যোদ্ধাদের কাছ থেকে গুলি চাওয়ার জন্য মাথা উঁচু করলে পাক হানাদারের ছোঁড়া একটি গুলি তার মাথা ভেদ করে। সেখানেই শহীদ হন লুৎফর রহমান।

মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের জীবনদানের মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে ৬ নং সেক্টরের অধীনস্থ ফুলবাড়ীর মুক্তি যোদ্ধারা দুর্বার হয়ে ওঠেন। ধ্বংস করেন পাক হানাদারের ঘাঁটি। ফুলবাড়ীকে রাখেন শত্রুমুক্ত। শহীদ লুৎফর রহমানের নামে ফুলবাড়ী সদর থেকে ফুলসাগর পর্যন্ত একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে শহীদ লুৎফর রহমান স্মরণি।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে এই শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলবাড়ীবাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও কবর জিয়ারত করে আসছে।

২৮ মার্চ পালন করা হচ্ছে তার শাহাদৎবার্ষিকী। এই দিনে তার পারিবারিক ঠিকানা খোঁজার জন্য ফুলবাড়ী সাহিত্য পরিষদ ও সামাজিক সংগঠন ফ্রেন্ডস ফোরামের ব্যানারে ফুলবাড়ীবাসীর পক্ষে দাবি করা হয়।

সর্বশেষ পারিবারিক ঠিকানা ও তার পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ার জন্য দাবি সংবিলত একটি স্মারকলিপি গত ২৮ মার্চ এই প্রতিবেদক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালায়সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদরদপ্তর ঢাকার পিলখানা থেকে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের পারিবারিক ঠিকানা ও পরিবারবর্গের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

 

 

আজকের স্বদেশ/জুয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Design and developed By: Syl Service BD