আজকের স্বদেশ ডেস্ক::
বরিশালের উজিরপুরে শিশু সাইয়ুম হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের তিন দিনের মাথায় হত্যা রহস্য উদঘাটন করে ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাদক সেবনে বড় ভাই বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাধাদানকারীর ছোট ভাই শিশু সাইয়ুম বিশ্বাসকে (১১) গলাটিপে হত্যা করেছে মাদকসেবী ঘাতক মিলন ফকির (১৮)। হত্যার পর সাইয়ুম বিশ্বাসের কাছে থাকা এনড্রয়েড ফোন সেট নিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক।
বুধবার দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানায় মাদকসেবী ঘাতক মিলন ফকির। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো: হেলাল উদ্দিন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগদা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মিলন ফকিরকে আটক করে পুলিশ। সে ওই এলাকার আলম ফকিরের ছেলে।
নিহত সাইয়ুম বিশ্বাস উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা এলাকার মোশারফ বিশ্বাসের ছেলে ও উত্তর সাতলা সাইয়েদিয়া কওমী মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আদালতে ঘাতকের দেয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানিয়েছেন, মিলন ফকিরের নানা বাড়ি উজিরপুর উপজেলার সাতলা বাজারের পাশে। হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগে ওই এলাকায় সে (মিলন) বেড়াতে যায়। ওই সময় মিলন ফকির সাইয়ুম বিশ্বাসের বাড়ির পাশে নেশা করতে যেত। সাইয়ুমের বড় ভাই নাঈম বিশ্বাস একদিন মিলন ফকিরকে নেশা করতে দেখে বাধা দেয় এবং গালমন্দ করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এরই জের ধরে গত ২৭ এপ্রিল সাতলা বাজারের মো: সান্টু ও রহিম বিশ্বাসের মালিকানাধীন একটি দোতালা ভবনের ছাদে কথা বলার জন্য ফাহিমকে ডেকে নিয়ে যায় মিলন। পরে সেখানে তাকে গলা টিপে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যা নিশ্চিত হওয়ার পর সাইয়ুমের লাশ ছাদের কার্নিশে রেখে সাইয়ুমের সাথে থাকা এনড্রয়েড ফোন সেট নিয়ে নানা বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজ বাড়ি আত্মগোপন করে ঘাতক মিলন।
ওসি শিশির আরো জানান, ২৮ এপ্রিল লাশ উদ্ধারের পর হত্যাকান্ড রহস্য তদন্তে নামে পুলিশ। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ওই ঘটনায় মিলনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপরই মিলনের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে গত মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়ার বাগদা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে মিলন ফকিরকে আটক করে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে ঘাতক মিলন ফকির নিজেই শিশু সাইয়ুম হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply