হেলাল আহমদ, ছাতক থেকেঃ
ছাতকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী জমিতে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন নারী চাষী উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার খাঁন ছানা। ইতিমধ্যে তার বাগানজুড়ে মাল্টা গাছে ফল এসেছে। আর মাত্র দেড় মাস পরেই পরিপক্ক মাল্টা বাজারজাত করতে পারবেন ওই নারী চাষী। এ বছর প্রথম গাছে ফল এসেছে। বাগান থেকে লক্ষাধিক টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ছাতক উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় সিলেট অঞ্চলে শস্যে নিবিড়তা বৃদ্বিকরণ প্রকল্পে মাল্টা প্রদর্শনী প্লট (বারি মাল্টা-০১) এর আওতায় উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের হাইলকেয়ারি গ্রামের সৌদ্দি প্রবাসী মুনসুর আলী মনসাদ মিয়ার স্ত্রী, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার খান ছানা নিজের বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত জমিতে ২০১৮ সালে মাল্টা চাষ শুরু করেন। তার নিজস্ব জমিতে আড়াই বছর আগে শখ এবং স্বপ্ন পূরণ করতে শুরু করেন মাল্টার বাগান। নিবিড় পরিচর্যা আর যতেœ চারা গুেেলা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। গত বছর গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে।
প্রায় শতাাধিক গাছে কম-বেশি ফল এসেছে। গাছ ভেদে ২০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে।
নাসিমা আক্তার খান ছানা জানান, তার বাড়ির পাশে ৫০ শতক জমির ওপর মাল্টা বাগান করেন তিনি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ বাগানটি আবাদ করেন। দুই শতাধিক মাল্টার গাছ লাগানোর পর এ বছরেই প্রায় দেড় শতাধিক গাছে মাল্টা ধরেছে। তিনি জানান, তার স্বামী সৌদি প্রবাসী মুনসুর আলী মনসাদের অনুপ্রেরণায় মাল্টা চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাল্টা চাষ সম্পর্কে ধারণা নেন। এক পর্যায়ে ভাল চারা কোথায় পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন। পরে ছাতক কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ি তিনি তার বসত বাড়ির পাশের জমিটি মাটি ভরাট করে মাল্টা চাষাবাদ শুরু করেন। এতে তার প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রথমবার তুলনামূলক ভাবে ফসল কম ধরলেও সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, মাল্টা চাষের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক চাষীই মাল্টার বাগান দেখতে ভিড় করছে এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন। আগামীতে মাল্টা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় একাধিক চাষী। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পেশার লোকজন মাল্টা বাগান পরিদর্শন করেছে এবং নতুন বাগান তৈরির আগ্রহ দেখিয়েছেন। নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মাল্টা বাগানের খবর শোনার পর আমি বাগানটি পরিদর্শনে যাই। সেখান থেকে কাঁচা অবস্থায় মাল্টা রস করে খেয়েছি। স্বাদ খুব ভাল। একজন নারী চাষী সাহস নিয়ে এত বড় বাগান গড়ে তুলেছেন দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছি। আমিও একটি বাগান করার চিন্তা-ভাবনা করছি।
এব্যাপারে উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, এখানে উর্বর মাটি যেন ফল-ফলাদি চাষের জন্য অনন্য এক উদাহরণ। ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, আমাদের তত্ত্বাবধানে চাষী নাছিমা আক্তার খান ছানা মাল্টার চাষ করেছে। শুরু থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হলে ছাতক উপজেলার চাহিদা পূরনের পাশাপাশি প্রতিবেশি জেলায়ও এর চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ করতে সক্ষম হবে।
আজকের স্বদেশ/তালুকদার
Leave a Reply