স্বদেশ ডেস্ক::
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার গার্মেন্টস শ্রমিক এনায়েত (২৭) হত্যাকাণ্ডের পৌঁনে তিন বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি পুলিশ। দুই বন্ধুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার কারণেই তাকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছে সিআইডি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামীকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার মনোহরপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে ঈমান (২২) ও একই এলাকা থেকে রুহিতপুর এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে মোঃ ফরিদুল ইসলাম ওরফে রাসেল (২৬)।
নিহত এনায়েত মাদারীপুর জেলার শিবচর মদবচর এলাকার মোঃ ইয়াছিন মিয়ার ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালতকে তারা জানায়, খারাপ আচরণের কারণে এনায়েতকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঈমান ও রাসেল। পরে ফোন করে ডেকে নিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে তাকে হত্যা করে।
রোববার (১৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় নারায়ণগঞ্জের সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ বাবুল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০১৭ সালের ৫ মে ফতুল্লার ধলেশ্বরী নদীতে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে আলোচিত এ মামলাটির তদন্তভার সিআইডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার দীর্ঘ পৌঁনে তিন বছর পর এএসপি মোঃ হারুন অর রশিদের তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের রহস্য। ঘটনার সাথে জড়িত ওই দুই আসামী শনাক্ত করে পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি মতে নিহত এনায়েত তার নানার বাড়ী দেওভোগ রঙ্গিলা রোডে থেকে ফতুল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে জননী ফ্যাশন লিঃ এ সুইং অপারেটর হিসাবে কাজ করত। চাকুরীর সুবাদে সহকর্মী ইমরান ও ফরিদুলের সাথে বন্ধুত্বের সর্ম্পক হয়। তারা একসাথে গার্মেন্টসে আসা-যাওয়ার করত এবং অবসর সময়ে দেওভোগ রঙ্গিলা রোডস্থ নূর মসজিদ সংলগ্ন চাচার দোকানে সময় কাটাতো। এনায়েত স্থানীয় ছেলে হওয়ায় ফরিদুল ও ইমরানকে সর্বদা দাপট দেখাত এবং তুচ্ছ কারণে নানাভাবে হুমকি দিতো।
স্বীকারোক্তিতে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, ২০১৭ সালের ১ মে সন্ধ্যায় এনায়েতকে ফোন করে ডেকে নেয় নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে। এরপর বক্তাবলী ঘাটের সাইড দিয়া ধলেশ্বরী নদীরপাড় একটি দো-চালা টিনের ঘরে তারা দুজন এনায়েতকে মারধর করে হত্যা করে। পরে লাশ ছেঁড়া পাটি দিয়ে পেঁচিয়ে ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়।
হত্যার তিনদিন পর লাশ নদীতে ভেসে উঠলে ফতুল্লা থানা থানা পুলিশ উদ্ধার করলেও পরিচয় অজ্ঞাত রয়ে যায়। দীর্ঘ পৌনে তিন বছর পর সিআইডি পুলিশ এই দুইজনকে গ্রেফতার করলে অজ্ঞাত লাশটি এনায়েতের বলে শনাক্ত হয়।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply