আকবর রেদওয়ান মনা,কোম্পানীগঞ্জ::
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাথর ব্যবসায়ীদের ৩ সংগঠন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতি,ষ্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতি ও ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানীকারক গ্রুপ সমিতির যৌথ উদ্যোগে সোমবার (৬মে) দুপুর ১২ ঘটিকায় কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বাবুল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সিলেট ভোলাগঞ্জ সড়ক নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ । এই সড়ক দিয়ে ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন ও উৎমা কোয়ারীর পাথর পরিবহন করা হয়।
এসব কোয়ারী থেকে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় করে থাকে। এ ছাড়াও ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানীকৃত চুনা পাথর ও কয়লা এই সড়কেই পরিবহন করা হয়।
আর্থসামাজিক গুরুত্ব বিবেচনায় বর্তমান সরকার এই সড়কটিকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করেছে । টেকসই ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে ৬ চাকার বড় ট্রাক গুলোও এখন কোম্পানীগঞ্জে প্রবেশ করছে।
ফলে দ্রুত, কম সময়ে ও খরচে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাল পরিবহন করা যাচ্ছে। এতে কোম্পানীগঞ্জের ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধিতেও ব্যবসায়ীরা ভূমিকা রাখছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নামে একটি সুবিধাবাদী চক্র নিজেদের স্বার্থ ও অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এই সড়কে ৪০০ ফুটের অধিক লোড নিয়ে পরিবহন চলাচলসহ অন্য জেলার ট্রাক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। চক্রটি কথায় কথায় গাড়ির চাকা অচল করে দেয়ার হুমকি দেয়। তারা সড়কের কয়েকটি স্থানে গাড়ি আটকিয়ে প্রতিদিন চাঁদাবাজি করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবরে অভিযোগ করেও কাজ হয়নি।
গত ২৯ এপ্রিল ইউএনওর ডাকে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার লোকজনকে নিয়ে একটি সভা হয়। ঐসভার সিদ্ধান্ত তারা মানছেনা। ট্রাক শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানে ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি করছে। কোম্পানীগঞ্জে কোন গাড়ি প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা।
এমনকি চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নানাভাবে ট্রাক মালিক ও সাধারণ শ্রমিকদের হয়রানী করছে। আমরা বাধ্য হয়েই গত শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জে সকল প্রকাল লোড আনলোড ও পাথর বেচাকেনা বন্ধ রাখা হয়েছে।
কিন্তু চোর শোনেনা ধর্মের কাহিনী। শ্রমিক ইউনিয়ন নামধারী ধান্দাবাজ চক্রটি নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপর চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করেন জেলা ট্রাক , পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শ্রী আবু সরকারের ইশারায় ধুপাগুল ব্যবসায়ী সমিতির ইন্ধনে রোববার থেকে সিলেট ভোলাগঞ্জ সড়কে অনিদিষ্ট কালের পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।
শ্রমিক নেতা হলেও আবু সরকার খাতির করেননা ট্রাক শ্রমিকদেরকেও। নিজের স্বার্থ তার কাছে সবার আগে। তার দাপটে অসহায় হলেও মুখ খুলতে সাহস পাননা সাধারণ শ্রমিকরা। কিংবা মুখ খুলেও প্রতিকার মিলেনা। এ অবস্থায় অনেকটা অসহায় হয়ে তার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হন শ্রমিকরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সিলেট ভোলাগঞ্জ সড়কে গাড়ি চলাচলে বাধা প্রদানসহ চাঁদাবাজি আবু সরকারের স্বার্থেই হচ্ছে। তার স্বার্থেই শ্রমিকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বার্থ রয়েছে ধোপাগুল এলাকার পাথর ব্যবসায়ীদেরও ।
ধোপাগুলের ব্যবসায়ীরা পাথর ব্যবসায় নিয়ন্ত্রন করতে চায় । তারা চায় ধোপাগুল এলাকায় পাথর মজুত করে বিক্রি করতে। একারনে আবু সরকারের ইশারায় ট্রাক শ্রমিকদেরকেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
ধোপাগুল ব্যবসায়ী ও আবু সরকারের মিতালীতে লাভবান হচ্ছে দু’পক্ষই। তাদের যৌথ প্রযোজনায় কোম্পানীগঞ্জ সড়কে নাটক মঞ্চায়িত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা বলেন, সড়কের এমন বিশৃঙ্খলা চলতে দেয়া যায়না। আগামী তিন দিনের মধ্যে সিলেট ভোলাগঞ্জ সড়কে শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক সকল ধরণের চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধ না হলে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান।
প্রয়োজনে কোম্পানীগঞ্জের সাধারণ জনগণকে নিয়ে ধান্দাবাজ,মতলববাজও সুবিধাবাদী শ্রী আবু সরকারকে প্রতিহত করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল,
জসিম উদ্দিন আঙ্গুর, মিল মালিক সমিতির আব্দুল হেকিম, আবু বক্কর,বাবুল মিয়া, চুনা পাথর আমদানি কারক সমিতির সিরাজুল ইসলাম সুলেমান সহ ২৬জন ব্যবসায়ী।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply