সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি::
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর সহায়তায় শান্তিতে বিজয় প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জ এর পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তন কক্ষে একটি সামাজিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সহিংসতা পরিহার ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয় সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সরকারি সেবা সমূহের উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করাই ছিল এই সামাজিক সংলাপের উদ্দেশ্য। সমাজের বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ যেমন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, সরকারি প্রতিনিধি, যুব ও নারী প্রতিনিধি এ গোল টেবিল সংলাপে অংশ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য পাঠ ও কর্মশলা সঞ্চালনা করেন ‘শান্তিতে বিজয়’ ক্যাম্পেইন প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী জুবায়ের আহমদ, অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর রিজিওনাল কোঅর্ডিনেটর ফরহাদ আহমদ।
আজ বুধবার অনুষ্ঠি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘শান্তিতে বিজয়’ ক্যাম্পেইন প্রকল্পের জেলা সমন্বয়ক আব্দুন নূর, উপজেলা সমন্বয়ক শাজাহান সিরাজ ও শফিকুল ইসলাম। নির্বাচনকালিন সময়ে বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ নানা রকম হালমা, মামলা ও পুলিশি হয়রানির শিকার হন। বিরোধী দলের অনেক প্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন অত্র এলাকার শত শত নেতাকর্মী নির্বাচনের পূর্বে নানা ধরনের হামলা ও মালায় জর্জরিত ছিল।
নির্বাচনের পূর্বের তুলনায় বর্তমানে পুলিশ হয়রানি পরিমাণ কম হলেও বিরোধী মতের মানুষ নানান হয়রানির আশংকায় তাদের স্বাধীন মত প্রকাশে ভয় পাচ্ছেন। নানান অজানা আশংকায় বিরোধী মতের মানুষ এক ধরনের কোনঠাসা জীবনযাপন করছেন বলে উপস্থিত অনেকেই মতামত প্রকাশ করেন।
উপস্থিত কোন কোন রাজিৈতক দলের প্রতিনিধিরা আবার উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থার কথা পূনর্ব্যক্ত করেন।পুলিশকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাবহার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, উন্নয়ন কাজে রাজনৈতিক বিবেচনায় বাস্তবায়নকারী নিয়োগ এসব কিছু সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় বলে উপস্থিত অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেন।
স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক সংগঠন তৈরী করতে হবে এব এসব সংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সরকারী সেবার অন্তরায় সমুহ মোকাবেলা করতে হবে। উপস্থিত সভায় একজন নারী বলে উন্নয়ন কার্যক্রমের সঠিক বাস্তবায়নে স্থানীয় যুব সংগঠনের সম্পৃক্ততা থাকলে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের দূর্নীতি হ্রাস পাবে বলে আমি মনে করি।
কর্মশলায় উপস্থিত ব্যক্তিবর্গরা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন সমস্য চিহ্নিত করেন এবং এসকল সমস্যগুলো সমাধে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুনামগঞ্জ শহরের সাথে সিলেটের রেল লাইনের ব্যবস্থা করা, সুনামগঞ্জের আভ্যন্তরীন সড়কের উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন,পরিকল্পিত শহরায়ন,হাওর ফসল রক্ষাবাধ নির্মান ও রক্ষনাবেক্ষন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবস্থা করা, শিশুদের জন্য বিনোদন পার্কের ব্যবস্থা করা। রাস্তাঘাট নির্মাণে রয়েছে অনিয়ম, রয়েছে অবৈধ ভাবে খাল বিল দখলের অভিযোগ। ।
সুনামগঞ্জের একমাত্র সরকারী হাসপাতাল, যেখানে সব ধরনের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে সেবা প্রত্যাশিরা স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন। বেকার সমস্যা একটি জাতীয় সমস্যা হলেও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বেকার সমস্য সমাধাণে কোন যথাযত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেও অনেকে মন্তব্য করেন ।
আলোচনায় উঠে আসা এসকল সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন সমাজিক সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা, নিজ ও নিজ পরিবারকে দূর্নীতে মুক্ত রাখা। রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে সামাজিক যুব সংগঠন গুলোকে সম্পৃক্ত করা ও স্থানীয় যুবসমাজের অংশগ্রহণে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে সকললে সহমত ও সহাবস্থা তৈরী করা সম্ভব।
এ সময় বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগনেতা শফিকুল আলম, জেলা পরিষদ সদস্য ফৌজিয়ারা শাম্মী, বিএনপিনেতা নাদের আহমদ, সেলিম উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাস, দৈনিক সুনামগঞ্জ সময়ের সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মো: সেলিম আহম, রাজিব প্রমুখ।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply