স্বদেশ ডেস্ক::
দীর্ঘদিনের ভালোবাসার সম্পর্ক। বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক করার পর প্রেমিক বিবাহে অসম্মতি জানালে ক্ষোভে প্রেমিকা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের তেতুলিয়াপাড়া গ্রামে।
নিহতের পরিবার প্রতারক প্রেমিক প্রভাবশালী গ্রাম্য সালিশদারের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের তেতুলিয়াপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে আছমা খাতুন (২৩) স্থানীয় এক এনজিওতে কাজ করত। ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া নিয়ে একই গ্রামের দেওয়ানিয়া বাড়ি এলাকার সিরাজের ছেলে সাব্বির আহমেদ শুভর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। একপর্যায়ে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে শুভ। এদিকে বারবার বিয়ের কথা বললেও রাজি হচ্ছিল না শুভ।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় লোকলজ্জার ভয়ে ছেলেটিকে বিয়ের জন্য তাগিদ দিচ্ছিল। রোববার বেলা ১১টার দিকে মেয়েটি বাড়ি থেকে বের হয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করে এবং বিয়ের কথা বললে ছেলেটি তাতে অসম্মতি জানায়।
ক্ষোভ আর কষ্টে তাৎক্ষণিক আছমা খাতুন। পরে শুভ তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং আসমার বোনকে খবরটি জানিয়ে সটকে পড়ে। বোনেরা হাসপাতালে পৌঁছলে শুরু হয় আসমার চিকিৎসা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর আড়াইটার দিকে আসমা মারা যান।
এনজিওকর্মী আসমা খাতুনের বড় বোন জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ছেলেটির সঙ্গে আমার বোনের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। গত অক্টোবর মাসে ছেলেটি আমাদের বাড়িতে আসলে আমরা বিয়ের তাগিদ দেয় এবং স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে বিয়ে কথা বললে শুভ বিয়েতে রাজি হয়। এ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী মকবুল হোসেন শুভর কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাকে বিয়েতে রাজি করাবে বলে আমাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, রোববার সকালে আমার বোন বাড়ি থেকে বের হলে দুপুরে তার প্রেমিক আমাদের ফোন করে জানায় আছমা বিষপান করে ময়মনসিংহ মেডিকেলে আছে। আমরা ময়মনসিংহ মেডিকেলে আমাদের বোনের কাছে গেলে ছেলেটি আমাদের রেখে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার বোন মারা যায়। আমি এর বিচার চাই। গ্রাম্য সালিশদারদের বিচার চাই। তবে শুভর পিতা সিরাজুল ইসলামের দাবি এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
আছমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে বিষপানে তবে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বলা যাবে বলে জানান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
ত্রিশাল থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, ঘটনার শোনার পরপরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহে মেডিকেল কলেজ মর্গে আছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগে প্রেক্ষিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply