স্বদেশ ডেস্ক::
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের সভায় গতকাল এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী। এর আগে এশাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এশার বিরুদ্ধে হলের এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সূত্র জানায়, তদন্তে পায়ের রগ কাটার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বিধায় এশার বিরুদ্ধে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এশার বিরুদ্ধে ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। গতকাল কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির কাছে। এরপর বেলা ১১টার দিকে শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়। সূত্র জানায়, এশার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে রগ কাটার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই সভায় প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এশার বিরুদ্ধে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ এশাকে হেনস্তাকারী হিসেবে হলের ২৬ ছাত্রীর নামও জমা দিয়ছে বলে জানিয়েছে সূত্র। এশার ওপর থেকে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার এবং তাকে হেনস্তার দায়ে ২৬ ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তের খবরে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১০ এপ্রিল মধ্য রাতে ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়াসহ ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। এতে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস। রাত ১২টা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করে। কবি সুফিয়া কামাল হলের সাধারণ ছাত্রীরা হলের সামনে জড়ো হন। এ ছাড়া বিজয় একাত্তর হলসহ বিভিন্ন হলের আবাসিক ছাত্ররা রাতে হলের গেট ভেঙে মিছিলসহকারে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হন। পরিস্থিতির একপর্যায়ে কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এশাকে ধরে গলায় জুতার মালা পরান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে এশাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে। ছাত্রলীগও তাকে কমিটি থেকে বহিষ্কার করে।
যে ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়ে তার নাম মোর্শেদা খানম। তিনি কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার ছাত্রলীগের সহসভাপতি।
পরবর্তীতে ১২ এপ্রিল ছাত্রলীগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী এশাকে নির্দোষ ঘোষণা করে ১৩ এপ্রিল ছাত্রলীগ এশার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়। অপর দিকে এশাকে হেনস্তা করার অভিযোগে ১৬ এপ্রিল মোর্শেদা খানমসহ ২৪ ছাত্রলীগ নেত্রীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ।
আজকের স্বদেশ/জুয়েল
Leave a Reply